মাদকাসক্তি কি - মাদকাসক্তির প্রতিকার - মাদকাসক্তির কারন

বিশ্বব্যাপী মাদকদ্রব্য বিস্তার লাভ করেছে। মাদকদ্রব্যের উৎপাদন, বিস্তার, চোরাচালান বর্তমানে আন্তর্জাতিক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত। আন্তর্জাতিক মাফিয়াচক্র বাংলাদেশকে এদেশের এজেন্টের সহযোগিতায় মাদক পাচারের করিডোর হিসেবে ব্যবহার করছে। ফলে বাংলাদেশে মাদকদ্রব্য বিস্তার লাভ করছে এবং তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করে তাদের জীবনকে ধ্বংসের দিকে ধাবিত করছে, নিঃস্ব করে দিচ্ছে অনেক পরিবারকে।তাই আজ সচেতনতা বাড়াতে আমরা জানবো মাদকাসক্তি কি , মাদকাসক্তির প্রতিকার ও মাদকাসক্তির কারন সম্পর্কে।

মাদকাসক্তির মরণ ছোবলে নীল হয়ে উঠছে দেশের হাজার হাজার তরুণ তরুণী। অথচ এই যুবসমাজই আগামীর বাংলাদেশকে পরিচালনা করবে। দেশের তরুণ যুবকরা বিভিন্ন কারণে মাদকের সর্বনাশ আসক্ত হয়ে শুধু নিজেদের ক্ষতি করছে না বরং পরিবার ও সমাজের জন্য, বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে দেশে। মাদকাসক্তির অভিশাপ থেকে জাতিকে মুক্ত করতে না পারলে অদূর ভবিষ্যতে এর ভয়াবহ পরিণাম নেমে আসবে।

সূচিপত্রঃ মাদকাসক্তি কি - মাদকাসক্তির প্রতিকার - মাদকাসক্তির কারন

মাদকাসক্তি কি

আলোচনার শুরুতেই আপনাদের জানাবো মাদকাসক্তি কি সে সম্পর্কে।তাহলে চলুন প্রথমে জেনে নেয়া যাক মাদকাসক্তি কি। মাদকদ্রব্যে আসক্তি এক কথায় মাদকাসক্তি বলে। বিশেষ কোনো মাদকের প্রতি আসক্তি এমন এক পর্যায়ে এসে পৌঁছায় যে তখন ভালো-মন্দ হিতাহিত জ্ঞান লোপ পায়। কেবল মাদকের প্রয়োগেই ব্যক্তি সাময়িক সুস্থতা অনুভব করে। মাদকাসক্ত ব্যক্তি শরীরিক ও মানসিকভাবে পুরোপুরি ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) হিসাব অনুসারে বিশ্বের প্রায় ৫০/৬০ কোটি মানুষ সর্বনাশা মাদকের নেশায় আক্রান্ত।আশা করি বুঝতে পেরেছেন মাদকাসক্তি কি।

মাদকদ্রব্যের প্রকারভেদ

বাংলাদেশের শতকরা ১০ ভাগ অর্থাৎ ৫ লক্ষে হিরোইন আসক্ত যাদের বয়স ১৫ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। বিশ্বে মাদকাসক্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার যেখানে শতকরা ২ ভাগ সেখানে বাংলাদেশের এ বৃদ্ধির হার দ্বিগুণ। এর প্রধান কারণ মাদকদ্রব্যের সহজলভ্যতা। বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য রয়েছে যেমন-- ধূমপান জাতীয়: গাঁজা বা ক্যানাবিস, মারিজুয়ানা, হাশিশ বা চরস, ভাং, আফিম ও হেরোইন। তরল জাতীয়: ফেনসিডিল, বাংলা মদ, তাড়ি, ওয়াইন, হুইস্কি, ব্রান্ডি, ভদকা ইত্যাদি। ইনজেকশন জাতীয়: ইয়াবা বা স্পিড, ডব্লিউ ওয়াই, ক্যানবিনল, কোডিন, ডন, এমফিটামিন। ঘুমের ট্যাবলেট: ডায়াজিপাম, ভ্যালিয়াম, রিলাক্সেন, সেডিল, লোরাজিপাম, এ্যাটিভান, ক্লোরাডায়াজিপোক্সাইড বা লিব্রিয়াম ইত্যাদি।

মাদকাসক্তির কারন

মাদকাসক্তি কি তা আপনাদের জানিয়েছি ,এবার আপনাদের জানাবো মাদকাসক্তির কারন।মাদকাসক্তির কারন হতে পারে একাধিক।মাদকাসক্তির বৃদ্ধি প্রধান কারণ সহ্যলভ্যতা হলেও এটি একমাত্র কারণ নয় । বেকারত্ব, জীবনে হতাশা, সঙ্গদোষ, সন্তানের প্রতি পিতা-মাতার অমনোযোগিত বা উদাসীন, পিতার কালো টাকার প্রাচুর্য, ক্ষেত্র বিশেষে পিতা-মাতার উচ্ছশৃঙখল জীবনযাপন, নীতি-নৈতিকতা রাজনীতির দুর্বত্তায়ন, চাঁদাবাজি ও গডফাদার সংস্কৃতি। 
আবার যে কোনভাবেই রাতারাতি ধনবান হওয়া উন্মুত্ত আকাঙ্ক্ষার ফলে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পায় এবং সংগত কারণেই মাদকের দিকে ঝুকে পড়ে। মানুষের মনে যে মানবিক অনুপ্রেরণা ছিল, মানুষ মানুষের জন্য বলে একটা বোধ ছিল, তা আর অবশিষ্ট থাকেনা। সকল প্রকার অন্যায় অপরাধ দুর্নীতি নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতা উৎস হচ্ছে মাদকাসক্তি। মাদকাসক্তির কারণ পৃথক হয়ে থাকে আমাদের দেশের তরুণ সমাজের এক বৃহৎ অংশ কেবল কৌতূহলের বসে মাদক গ্রহণ করে। 
পরে এর সর্বনাশ নেশায় নিজেদের উৎসর্গ করে। নতুন অভিজ্ঞতা অর্জনের আশায় কুসঙ্গে পড়ে প্রায়শই মাদক গ্রহন করে থাকে। কিছু অংশ বেকারত্ব হতাশার শৃঙ্খলে বন্দি হয়ে মাদকের অভিশাপ লাভ করে। দেশের আর্থ সামাজিক পরিস্থিতির অবনতি কর্ণ যুবসমাজ আশা হারিয়ে ফেলে। আরেক দল তরুণ পরিবার থেকে এবং পরিবারের বাইরে ঘনিষ্ঠ কারো কাছ থেকে আঘাত পেয়ে মাদকের দিকে ঝুঁকে পড়ে। মাদকাসক্তির পেছনে কারণ যাই থাকুক না কেন পরবর্তী সময়ে এর মরণ থেকে কেউ বাঁচতে পারে না। যে অশান্তি, হতাশা ও সঙ্গদোষে সে মাদক গ্রহণ করে সেই মাদকের নিদারুণ পরিণতি উপলব্ধি করেও তা থেকে আর ফিরে আশার উপায় থাকে না।

মাদকাসক্তির উৎস

এবার চলুন জানা যাক মাদকাসক্তি উৎস সম্পর্কে।মাদকাসক্তির উৎস হলো পৃথীবির বেশ কয়েকটি মাদক উৎপাদনকারী বলয় আছে। এর মধ্যে গোল্ডেন ক্রিসেন্ট, গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল ও গোল্ডেন ওয়েজ অন্যতম। পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরান, তুরস্ক এবং এর আশপাশের অঞ্চল নিয়ে গড়ে উঠেছে গোল্ডেন ক্রিসেন্ট। আবার লাউস, থাইল্যান্ড এবং অঞ্চল নিয়ে গড়ে উঠেছে গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল। অন্যদিকে এ বলয় দুটির মধ্যবর্তী অঞ্চল নিয়ে গড়ে উঠেছে গোল্ডেন ওয়েজ। এসব এলাকায় প্রচুর পরিমাণে আফিম, গাঁজা, পপি ও কোকেনের উৎপন্ন হয়। এছাড়াও ভারত যুক্তরাষ্ট্র ব্রিটেন, কলম্বিয়া, ব্রাজিল, মেক্সিকো, পেরু, নিকারাগুয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকায় রয়েছে মাদক উৎপাদন ও মাদক ব্যবসার বিশাল আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক।

মাদকাসক্তির পরিণাম

মাদকাসক্তি পরিণাম হতে পারে ভয়াবহ। মাদকাসক্তির পরিণাম দেখা যায় অনিবার্য মৃত্যু। একজন মাদকসেবীর যেমন শারীরিক, মানসিক, পারিবারিক ক্ষতিসাধিত হয় তেমনি সমাজজীবনে, রাষ্ট্রের সর্বোপরি জাতীয় জীবনে নেতিবাচক প্রভাব একসময় মারাত্মক ধ্বংস করে দেয় কোন দেশের অর্থনীতি। বস্তুত দেশের চালিকাশক্তি বলে খ্যাত যে যুব সমাজ তারাই যখন মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে তখন সে দেশ পঙ্গুতে পরিণত হয়। সমস্ত উন্নয়ন ও অগ্রগতি মুখ থুবড়ে পড়ে। আর এর মাশুল দিতে হয় পুরো জাতিকে। মাদকাসক্তির পরিনাম কারো জন্য সুফল বয়ে আনে না। মাদকাসক্ত ব্যক্তি তিলে তিলে নিঃশেষ হয়ে যেতে থাকে। ক্যান্সার, যক্ষ্মা, আলসার পঙ্গুত্বসহ নানা দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মাদক গ্রহণের চূড়ান্ত পরিণতি মৃত্যু। 
নেশাগ্রস্ত ব্যক্তির আচরণ পরিবার ও সমাজজীবনের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। মাদকের চাহিদা পূরণের জন্য বিপুল অংকের টাকার প্রয়োজন পড়ে। আর এই অর্থের সংস্থান করতে মাদকাসক্ত ব্যক্তির ছুরি, ছিনতাই, রাহাজানি পর্যন্ত করতে হয়। সে শুধু নিজেই শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয় না একসঙ্গে সমাজ ও দেশের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যত বেশি সংখ্যক তরুণ মাদকাসক্ত সে দেশের আর্থসামাজিক পরিচিত তত বেশি নাজুক ও দুর্বল মাদক কেনা বেচার মাধ্যমের বিপুল অংকের টাকার মারাত্মক অপচয় ঘটে। এভাবে টাকার অবমূল্যায়ন দ্রুততর হয়। মাদকাসক্তির কারণে আগামীর সম্ভাবনা অনেকাংশে নষ্ট হয়ে যায়। যে তরুণসমাজ মাঝে দেশের ভবিষ্যৎ চালিকাশক্তি, তাদের অধঃপতনের দেশ এক ঝাঁক নবঃসম্ভাবনা কে হারাতে বাধ্য হয়।

মাদকাসক্তির প্রতিকার

মাদক মুক্ত সমাজ গড়ার জন্য মাদকাসক্তির প্রতিকার সম্পর্কে সবাইকে জানতে হবে।মাদক প্রতিরোধ করার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ রয়েছে।চলুন এবের মাদকাসক্তির সম্পর্কে আলোচনা করা যাক। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মাদকাসক্তি প্রতিরোধের এ বিষয়ে নিম্নলিখিত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করা যেতে পারে। 
  • (১) মাদকাসক্তি থেকে পরিত্রাণের উদ্দেশ্যে সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে হবে।
  • (২) পরিবারের কর্তা-কর্ত্রী বাবা-মাকে সতর্ক থাকতে হবে কিশোর বয়সের সন্তান গতিবিধির সম্পর্কে।
  • (৩) তরুণ সমাজকে সুস্থ বিনোদনে আকৃষ্ট করতে হবে।
  • (৪) পাঠ্যপু বলছি মাদকাসক্তির কুফল বিষয়ে রচনা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
  • (৫) সন্তানের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের বন্ধুসুলভ সম্পর্ক তৈরি করতে হবে
  • (৬) নৈতিক মূল্যবোধ ও ধর্মীয় শিক্ষা প্রসার ঘটাতে হবে।
  • (৭) মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে সসহানুভূতিশীল দৃষ্টিতে দেখতে হবে।
  • (৮) আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
  • (৯) তরুণ সমাজকে আশাবাদী করে তুলতে হবে।
  • (১০) জাতীয়ভাবে মাদক নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
  • (১১) মাদক অপরাধীদের কঠোর শাস্তি বিধান বিচার কার্যকারী করতে হবে।
  • (১২) আন্তর্জাতিকভাবে মাদক নিয়ন্ত্রণ এ দেশে সহযোগিতামূলক কার্যক্রম বাড়াতে হবে ইত্যাদি সচেতনতার মাধ্যমে সমগ্র জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
এছাড়াও সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মাদক পাচার ও বিস্তার রোধের সচেতনতানিষ্ঠ দায়িত্ব পালন করতে হবে ব্যর্থতার জন্য জবাবদিহিদের ব্যবস্থা করতে হবে। এর পাশাপাশি মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করতে হবে। এ ব্যাপারে পিতা-মাতা ও নিকটস্থ অন্যান্য অভিভাবকের সহায়তা, সচেতনতা উদ্যোগ খুবই জরুরী। সন্তানকে মাদক থেকে দূরে রাখতে এবং মাদকাসক্ত সন্তানকে সুস্থ ফিরিয়ে আনতে সচেতন মাতা পিতা তের ভূমিকা মুখ্য। ছাত্রছাত্রীদের তাদের পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধ বজায় রেখে পড়াশোনা, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হবে। এসব প্রতিকারমূলক ব্যবস্থার অনেকগুলোই কাগজে আছে কিন্তু এর যথাযথ প্রয়োগ নেই। সুতরাং বিধান তৈরীর সঙ্গে সঙ্গে তা কার্যকর করে তোলার পদক্ষেপ নিতে হবে। মাদকবিরোধী অভিযানে সরকার ও বেসরকারি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সমন্বয় করা গেলে মাদকের অপব্যবহার বহুলাংশেই সেই কমে যাবে।
মন্তব্য, বর্তমানে বাংলাদেশে মাদকাসক্তি একটি জাতীয় সমস্যা পরিণত হয়েছে। এ সমস্যা থেকে উত্তরণের প্রধান উপায় ও যুব সমাজকে শিক্ষিত শিক্ষা ও কর্মের নিয়োজিত রাখার মাধ্যমে হতাশামুক্ত রাখা। তাদের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করা এ ব্যাপারে সমাজ ও রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মাদকাসক্তির ভয়াবহ পরিণামস্বরুপ অনেক তরুণ তরুণী আজ মৃত্যু পথ ধরে চলছে, অনেক পরিবারের ধ্বংসের মুখে। তরুণসমাজই মূলত এ মরণ নেশায় আক্রান্ত হওয়ায় আগামী বিশ্বের জন্য তা হুমকির কারণে দাঁড়িয়েছে। মাদক পাচার ও বহনের বিরুদ্ধে কোঠর আইনের পাশাপাশি এর কার্যকর প্রয়োগ ঘটানোর দরকার। একই সঙ্গে আমাদের সবার স্বার্থেই তরুণসমাজের মধ্যে ইসলামী মূল্যবোধ, আদর্শ ও মানবিক চেতনা বৃদ্ধি করতে হবে, তরুণ সমাজ কেন বর্ষা ও আকাঙ্খায় উদ্দীপ্ত করে তুলতে হবে। আমরা মাদকবিরোধী আন্দোলনে সফল হব সেদিন, যেদিন সকলের প্রতি সুস্থ জীবনের চেতনা উদ্ভাসিত হয়ে গিয়ে উঠতে পারব- পেথেড্রিক, হিরোইন নেশার আস্তানা দুমড়ে মুচড়ে দিতে ধরো হাতখানা। চলো প্রতিরোধ গড়ে তুলি প্রতিবিশ্বের প্রান্তর জুড়ে মরণ আসে যদি তবু পিছু ফের না

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url