বাংলা আর্টিকেল রাইটিং - আর্টিকেল লেখার নিয়ম - আর্টিকেল লিখে আয়

অবশ্যই ভালো মানের কন্টেন্টের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বাংলা আর্টিকেল রাইটিং করে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আর্টিকেল লিখে আয় করা খুব কঠিন কিছু না। বাংলাদেশের অনেকেই আছে যারা বাংলা আর্টিকেল রাইটিং করে মাসে ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা আয় করছে শুধুমাত্র আর্টিকেল লিখে। 
অনেকেই কিছু জানে না অথচ সে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা আর্টিকেল লিখে আয় করছে। প্রিয় পাঠক আজকে আমি আপনাদের সামনে আলোচনা করব, কিভাবে বাংলা আর্টিকেল রাইটিং করা যায় আর্টিকেল লেখার নিয়ম এবং কিভাবে আর্টিকেল লিখে আয় করা যায়।

সুচিপত্রঃ বাংলা আর্টিকেল রাইটিং - আর্টিকেল লেখার নিয়ম - আর্টিকেল লিখে আয়

কিভাবে শুরু করবেন

১। প্রথমে নিজে নিজেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিয়মিত লেখা শুরু করে দেন এতে আপনার লেখালেখির দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস বাড়বে শুরুতেই কি নিয়ে লিখবেন ভাবছেন। এমন বিষয় বাছাই করুন যা আপনি সবচেয়ে ভালো জানেন আপনার মনে স্ট্রং ফিলিংস কাজ করে সেই বিষয় কে গুরুত্ব দিন পাঠক কোন বিষয়টি নিয়ে পড়তে বেশি আগ্রহী সেসব বিষয় নিয়েও লিখতে পারেন। মনে রাখতে হবে আর্টিকেল রাইটিং এবং ক্রিয়েশন দুইটা ভিন্ন ব্যাপার।

ক্রিয়েশনের জন্য চাই স্পেসিফিক বিষয়ে প্রচুর জানাশোনা এবং অনেক দিনের বাস্তব অভিজ্ঞতা যেখানে আপনার নিজস্ব মতামত প্রতিষ্ঠা করতে হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় রিসোর্স পেজ, স্টোরি শেয়ারিং ও কেস স্টাডি। কিন্তু আর্টিকেল বিভিন্ন জানাশোনা কে  ভিন্ন ভাবে উপস্থাপনা করা হয়, যা তুলনামূলক সহজ।। শুরুতে আপনি হয়তো কোন বিষয়ে অভিজ্ঞতা উজাড় করে লিখতে পারবেন না হতাশ হবেন না লিখে যান নিয়মিত।

২। সাত ধরনের লিখার স্ট্রাকচার হতে পারে। আর এই জন্যই প্রথমেই আইডেন্টিফাই করতে হবে কোন বিষয়ের জন্য কোন ধরনের স্ট্রাকচারে লিখতে হবে। মনে রাখবেন প্রতিটি ক্ষেত্রে বিষয় বস্তু ও অ্যাপ্রচ অনুযায়ী লেখার মান কোয়ালিটি এবং এবং স্টাইল ভিন্ন ভিন্ন হয়। এছাড়াও ব্লগার প্রোডাক্ট রিভিউ সেল রিসার্চ স্টোরি শেয়ারিং এর জন্য কেমন লিখবেন সে বিষয়ে প্রচুর পড়াশুনা করতে হবে গুগলে সার্চ করে লেখাগুলো ফলো করুন।

৩। লিখার সময় গ্রামারের প্রতি এবং শব্দ ও বাক্যচয়নে বিশেষ নজর দিন।

৪। লিখালিখিতে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ড্রাফটিং এবং রিভিশন। আপনাকে অবশ্যই লেখার শেষে লেখাটি রিভিশন দিতে হবে।

৫। লেখালিখি করার জন্য আপনাকে প্রচুর পড়তে হবে বিভিন্ন বিষয়ে জানতে হবে।

ভালো মানের লেখকদের বই এবং জনপ্রিয় ব্লগারদের বউ নিয়মিত পড়া, তাদের লেখনী ফলো করতে করতে একসময় আপনার নিজস্ব স্টাইল তৈরি হয়ে যাবে যা আপনাকে সবার মাঝে ইউনিক করে তুলবে।

কাকে উদ্দেশ্য করে লিখছেন

লিখার আগে জানা চাই কেন লিখছেন, কাদের টার্গেট করে লিখছেন এবং তারা কি চায়। লেখার পাঠক কে সেটা নির্ণয় করুন। মনে রাখতে হবে লেখা যেন যুক্তিযুক্ত হয়। ওয়েবসাইট এবং বিভিন্ন বিষয়বস্তু অনুযায়ী ঠিক করে নিতে হয় লাইন অফ অ্যাকশন। আর প্রথমেই নিজের মনকে জিজ্ঞেস করুন আপনি এই বিষয়ের পাঠক হলে কি কি তথ্য পেতে চাইতেন এই লিখা থেকো

সেক্ষেত্রে আমার পার্সোনাল মতামত হচ্ছে প্রথমে বিষয় ভিত্তিক প্রশ্ন খুঁজে বের করা। কি বুঝালাম বুঝলেন না তো ধরুন আপনার বিষয় ইন্সুরেন্স। তাহলে ইন্সুরেন্স নিয়ে কি ধরনের প্রশ্ন করতে পারে সেগুলো আগে খুঁজে বের করুন।

  1. ইন্সুরেন্স কি ?
  2. কেন প্রয়োজন ?
  3. করার আগে কি কি বিষয় মাথায় রাখতে হবে ?
  4. বেস্ট প্রোভাইডার কে ? কি সুবিধা দেবে ?
  5. কেন প্রিমিয়াম দিতে হবে ?

কারণ পাঠকের এই প্রশ্ন গুলোই অজানা, এ বিষয়ে থেকে তথ্যগুলো সে জানতে চাচ্ছে।

কিভাবে লিখবেন

প্রথমে লিখাটির টাইটেল লিখুন। আমি টাইটেল লেখার সময় কমপক্ষে চার থেকে পাঁচ ভেরিয়েশন লিখি, তারপর সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয়টিকে বাছাই করি। টাইটেল আকর্ষণীয় হলে ইউজারের পড়ার ইচ্ছা জাগে টাইটেল দেখেই লিখাটি পড়তে আগ্রহী হয়। 

এবার আপনাকে লিখতে হবে, লেখার আগে যা লিখতে চান সেটার মূল পয়েন্টগুলো (অর্থাৎ প্রশ্নগুলো ) লিখে নেন। প্রশ্নগুলোর বিষয়ে পরিপূর্ণ জানাশোনা কিংবা অভিজ্ঞতা থাকলে ভালো, অন্যথায় নির্দিষ্ট প্রশ্ন নিয়ে সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করে বিভিন্ন ব্লগ পড়ে, কিংবা ফোরামে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে জানাশুনা বাড়াতে হবে। 
বলতে পারেন রীতিমতো গবেষণা করতে হবে। যে বিষয়ে লিখবেন সে বিষয়ে কোনো ধরনের ধারণা না থাকলে কখনোই ভালো লিখতে পারবেন না। তাই যে বিষয়ে লিখবেন সে বিষয়ে বিভিন্ন ফোড়া এবং ব্লগ ভিজিট করুন এবং এতে আপনার ধারণা ক্লিয়ার হবে।

গবেষণার কাজ শেষ হলে, এবার লিখাটিকে তিনটি ধাপে সাজান। ভূমিকা, পোস্ট বডি এবং উপসংহার।পাঠক পুরো আর্টিকেলটিতে কি পেতে যাচ্ছে সেটা স্থান পাবে ভূমিকায়। তারপর লিখার মূল অংশ অর্থাৎ পোস্ট বডি। এখানেই আপনাকে পাঠকের প্রশ্নের সমস্ত আলোচনা করতে হবে এবং সমস্ত বিষয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে লিখতে হবে।

নিজস্ব সৃজনশীল তাই তথ্যকে সম্পূর্ণ করে লিখতে হবে পাশাপাশি লেখায় অবশ্যই প্রাণ চঞ্চলতা থাকতে হবে এবং পাঠকে নতুন করে স্বাদ পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা।

রাইটার হিসেবে আপনাকে মনে রাখতে হবে, যারা আপনার লিখা পড়বেন তারা খুব চালাক সুতরাং তিনি চাইবেন কম সময়ে তার প্রয়োজনীয় জিনিস পড়তে। তাই সংগৃহীত তথ্যকে সংঘবদ্ধ ভাবে সাজিয়ে প্যারা করে লিখতে হবে।


আগেই বলেছি রাইটার হতে হলে আপনাকে অবশ্যই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে সেখান থেকে সঠিকটা জানার পরে আপনার মনের মত করে ছোট মাঝারি ও লম্বা বাক্য লিখে পাঠকের চাহিদা পূরণের চেষ্টা করতে হবে। মিশ্রণ করা চলবে না এবং শুদ্ধ বানান লিখতে হবে।

উপসংহারে আমরা পুরো বিষয় এর সামারি তুলে ধরব, পাঠককে আমরা যে বিষয় নিয়ে সে আমাদের আর্টিকেল পড়তে এসেছিল সে বিষয়টা কে তার সামনে তুলে ধরব। আর্টিকেল লিখা শেষ এবার আপনি পুরো আর্টিকেলটাকে সুন্দরভাবে পড়ে ভুল সংশোধন করুন অবাঞ্ছিত বাক্য ছেঁটে ফেলুন খুঁজে বের করুন কোথায় আপনার ভুল আছে।

এছাড়াও আর্টিকেল রাইটিং এর সময় রাইটার কে সার্চ ইঞ্জিন গুলোর  অনপেজ রিলেটেড বেশ কিছু ফ্যাক্টর ফলো করতে হয় যা সার্চ ইঞ্জিন গুলোতে আর্টিকেল গুলোকে দ্রুত  র‍্যাংক করতে সহায়তা করে। তাই রাইটার কে আর্টিকেল লেখার সময় গুরুত্বের সাথে নিচের এসব চেকলিস্ট টি ফলো করতে হবে।

  • টাইটেলে টার্গেটেড ব্যবহার
  • কিওয়ার্ড সিটি ফলো করে 
  • কিওয়ার্ড স্টাফিং না করা
  • রিলেটেড রিসোর্সে লিংকিং

ভালো মানের আর্টিকেল লিখতে হলে একজন আর্টিকেল রাইটারের অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত। বিষয়গুলো মনে রাখলে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করলে অবশ্যই আর্টিকেল রাইটার হিসেবে সফলতা পাওয়া সম্ভব।

এই ৯ টি চেকলিস অবশ্যই ফলো করবেন

  1. ওয়েব থেকে লিখা কপি করেছেন কি ?
  2. আপনি লিখার পূর্বে ভালোভাবে রিসার্চ করেছেন কি ? 
  3. আর্টিকেলটি কি ইউজারের চাহিদা মিটাবে ? 
  4. আপনার লেখাটি তথ্য গুলো কি আপডেটেড ? 
  5. আর্টিকেলটিতে কি গ্রামারটিকেল ইউজ আছে ? 
  6. আপনার লেখাটা কি ওয়েব এডিটেড ?
  7. আর্টিকেলটি কি স্কেনেবল ? 
  8. আপনার আর্টিকেলটিকে সার্চ ইঞ্জিন বান্ধব ?
  9. লিখাটি কি কি ইউজার স্বইচ্ছায় শেয়ার করবে ?

কখনোই এমনটি ভাববেন না যে আপনি কপি পেস্ট করে আর্টিকেল লিখবেন। বাজারে অনেক রিরাইট করা যায় এমন টুলস পাওয়া যায়, এগুলো ব্যবহারেরকথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন, কেননা এরা 40% ক্ষেত্রেই হিউম্যান রিডেবল লেখা দিতে ব্যর্থ।

আশা করি, পুরো লেখাটি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন। আপনি যদি জীবনে কিছু করতে চান তাহলে বেশি না মাত্র ৩০ দিন নিয়ম অনুযায়ী চর্চা করুন। তারপর একমাস পরে ফলাফল দেখুন। মানুষ সব পারে এবং মানুষ তার স্বপ্নের চেয়েও বিশাল। আশা করি পুরো লিখাটি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।
একজন আর্টিকেল রাইটার হওয়ার জন্য যা কিছু আপনার জন্য দরকার তার সবকিছু আমি এই লিখার মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url